মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ অপরাহ্ন
রবিন চৌধুরী রাসেল- রংপুর জেলা প্রতিনিধি.
লাখ টাকার গাছ অবৈধভাবে বিক্রি করে সেই টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্র নাথ সাহা হারুর বিরুদ্ধে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যেক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয় চত্বরে অবস্থিত সেগুন, মেহগুনি, আকাশমনি, ইউক্যালিপটাস, কাঁঠালসহ বিভিন্ন প্রজাতির মুল্যবান বেশকিছু গাছ অবৈধভাবে কর্তন করে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। কর্তনকৃত গাছের মূল্য আনুমানিক প্রায় ১৫-২০ লক্ষাধিক টাকা বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
কর্তনকৃত অধিকাংশ গাছের বড় বড় গোলাই স্থানীয় একটি ছ’মিলে নেওয়া হয়। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে ছ’মিলে রাখা গাছের গোলাই এর মধ্যে লোক দেখানো ভাবে কয়েকটি গোলাই ছ’মিল থেকে ভ্যানে করে স্কুল মাঠে ফেরত আনেন। সিংহভাগ বড় বড় গাছের গোলাই কোনরকম টেন্ডার ও নিলাম ডাক ছাড়াই চোরাইভাবে বিক্রি করে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্র নাথ সাহা হারু।
বিষয়টি নিয়ে সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন শিরোনামে জাতীয় দৈনিক, স্থানীয় দৈনিক পত্রিকাসহ ও অনলাইন পত্রিকায় ব্যাপকভাবে সংবাদটি প্রচার হয়। স্থানীয় বাসিন্দাসহ অভিভাবক মহল এ ব্যাপারে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক হারুর “দলীয় ক্যাডার” বিক্ষোভকারীদের কে প্রাণনাশের হুমকি সহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান ফলস্বরূপ প্রতিবাদী জনতা একপ্রকার চুপ চাপ হয়ে যায়। পরবর্তীতে বিষয়টি প্রসাশনের দৃষ্টিগোচর হলে তারা বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করে। সাবেক এমপি এইচ এন আশিকুর রহমান ও তার পুত্র আওয়ামী লীগ নেতা রাশেক রহমানের আস্থাভাজন ব্যক্তি হওয়ায় দু’বছর পেরিয়ে গেলেও কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি প্রসাশন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অত্র বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, ২০১৩ সালে ২০ লক্ষ টাকার ঘুষ বাণিজ্যর মধ্যে দিয়ে প্রধান শিক্ষক বনে যায় হরেন্দ্র নাথ সাহা। ২০১৭ সালে প্রধান শিক্ষক অবৈধভাবে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন স্থগিত করে পরবর্তীতে এমপি পুত্র রাশেক রহমানের যোগসাজশে আওয়ামীলীগ নেতা সাইদুর রহমানকে অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত করেন। সভাপতি নির্বাচিত করার পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম দূর্ণীতিতে জড়িয়ে পড়েন প্রধান শিক্ষক। তিনি আরো জানান নিয়োগ বাণিজ্য, বই বিক্রি, স্কুলের জায়গা অবৈধ দখলের মাধ্যমে পজিশন বিক্রি সহ নানান দূর্ণীতির সাথে জড়িত। বিগত ১১ বছরে তিনি স্কুলের কোটি টাকা লোপাট করেছেন। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে নানা প্রকার হয়রানির স্বীকার হতে হয়। তাই সবাই তার অন্যায় মেনে নিয়ে চুপচাপ থাকে।
হরেন্দ্র নাথ সাহা হারুর বিভিন্ন অপকর্ম ও দূর্ণীতির প্রতিবাদে জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিস, মাউশি, দূর্ণীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন সাবেক শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল। সাবেক শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল জানায় স্কুলের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অতি দ্রুত বিষয়গুলো তদন্ত সাপেক্ষে হরেন্দ্র নাথ সাহা হারুর অপসারণ ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী।